চাঁদের আলোয় রাজ্যের রক্ষা"
নিচে একটি ১০০% ইউনিক রূপকথার গল্প শেয়ার করছি:
গল্প: "চাঁদের আলোয় রাজ্যের রক্ষা"
অনেক দিন আগের কথা। নীলাভি নামে একটি রাজ্য ছিল যেখানে রাতের আকাশ চাঁদের আলোয় স্নিগ্ধ হয়ে থাকত। এই রাজ্যে সবাই সুখে-শান্তিতে বাস করত। তবে এই সুখের মধ্যে ছিল এক গোপন অভিশাপ। প্রতি একশ বছর পর রাজ্যের উপর নেমে আসত কালো অন্ধকার, আর সেই অন্ধকারে রাজ্যের প্রাণীরা পাথরে পরিণত হয়ে যেত।
রাজ্যের প্রাচীন পুঁথিতে লেখা ছিল, অন্ধকার কাটানোর একমাত্র উপায় হলো “চাঁদের দ্যুতি রত্ন”। কিন্তু সেই রত্ন ছিল একটি ভয়ঙ্কর ড্রাগনের পাহারায়, যে থাকত দূরের পাহাড়ের গুহায়। কেউ কখনও সেই ড্রাগনের মুখোমুখি হতে সাহস পায়নি।
একদিন, রূপা নামে এক সাহসী কিশোরী সিদ্ধান্ত নিল, সে রত্নটি এনে রাজ্যকে রক্ষা করবে। রূপার মা এক সময় ছিলেন রাজ্যের প্রধান জাদুকরী। মায়ের থেকে শেখা জাদুর কলা আর নিজের সাহসকে সঙ্গী করে রূপা বেরিয়ে পড়ল।
রূপার যাত্রা সহজ ছিল না। পথে তাকে অতিক্রম করতে হলো জাদুকরী নদী, যেখানে পানির ঢেউ কথা বলতে পারে। নদী তাকে বলল, “তুমি যদি সত্যিকার অর্থে রাজ্যকে রক্ষা করতে চাও, তবে আমাকে তোমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতি দিতে হবে।” রূপা তার ছোটবেলার স্মৃতিগুলো বিসর্জন দিল, কারণ তার কাছে রাজ্যের সুরক্ষাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এরপর, রূপা পৌঁছাল এক ঘন জঙ্গলে, যেখানে গাছেরা জীবন্ত ছিল। তারা তাকে আটকানোর চেষ্টা করল। কিন্তু রূপার নরম অথচ দৃঢ় কথায় তারা পথ ছেড়ে দিল।
অবশেষে রূপা পৌঁছাল ড্রাগনের গুহায়। ড্রাগনটি তাকে বলল, “রত্ন নিতে হলে, আমাকে এমন কিছু বলো যা কখনো শোনা হয়নি।” রূপা কিছুক্ষণ ভাবল, তারপর বলল, “অন্ধকারেরও আলো আছে, যদি তুমি তা দেখার চেষ্টা করো।” ড্রাগনটি থমকে গেল। সে এতদিন ধরে অন্ধকারকে শুধু ভয় করেছিল, কিন্তু কখনও বুঝতে পারেনি অন্ধকারের মধ্যেও সৌন্দর্য থাকতে পারে।
ড্রাগনটি মুগ্ধ হয়ে রূপাকে রত্নটি দিল। রূপা সেই রত্ন নিয়ে ফিরে এলো এবং রাজ্যের উপর থাকা অভিশাপ দূর করল। রাজ্যের সবাই আবার হাসি-খুশি হয়ে উঠল। রূপার সাহস আর বুদ্ধিমত্তার গল্প চিরদিনের জন্য স্মরণীয় হয়ে রইল।
এভাবেই চাঁদের আলো রাজ্যকে রক্ষা করেছিল।
শেষ।
No comments