রাজকুমারি ও ডাইনি বুড়ির গল্প
এক দেশে ছিল এক অদ্ভুত রাজকুমারি, নাম তার সোহানা। সে যেমন সুন্দরী, তেমনি বুদ্ধিমতী। সোহানার জন্মের সময় এক পুরোনো ভবিষ্যদ্বাণী ছিল—সে হবে এমন একজন, যার সৌন্দর্য এবং শক্তি তাকে অমরত্ব এনে দেবে। কিন্তু এর জন্য তাকে অন্ধকার এক ডাইনির চক্রান্ত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।
ডাইনির নাম ছিল গ্রিমলদা। সে ছিল সেই রাজ্যের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ডাইনি। তার একমাত্র ইচ্ছা ছিল সোহানার শক্তি চুরি করে নিজের অমরত্ব অর্জন করা। সোহানা যখন কিশোরী, গ্রিমলদা তাকে ধোঁকা দিয়ে এক গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে এক জাদুকরী গুহায় বন্দি করার চেষ্টা করে। কিন্তু সোহানা সহজে ধরা দেওয়ার মেয়ে নয়। তার মা তাকে ছোটবেলায় বলেছিলেন, "তুমি যদি কখনো বিপদে পড়, নিজের বুদ্ধি কাজে লাগাও।"
সোহানা সেই কথা মনে করে। ডাইনিকে ফাঁকি দিতে সে অভিনয় শুরু করে। সে বলে, "গ্রিমলদা মা, তুমি তো এত শক্তিশালী, কিন্তু এত বছর ধরে একাই আছ। কেন তোমার মতো ক্ষমতাবান ডাইনি আমাকে শেখাচ্ছেন না? আমি তোমার শিষ্য হতে চাই।"
গ্রিমলদা একটু থমকে যায়। "তুমি সত্যিই আমার শক্তি শিখতে চাও?"
সোহানা মাথা নেড়ে হেসে বলে, "হ্যাঁ, মা। তোমার মতো হতে পারলে তো আমি সবচেয়ে সুখী হব।"
ডাইনি রাজি হয়। কিন্তু সোহানা সুযোগ বুঝে তার দেওয়া এক প্রাচীন পাণ্ডুলিপি চুরি করে ফেলে। সেই পাণ্ডুলিপিতে ছিল ডাইনির দুর্বলতার কথা। জানা যায়, গ্রিমলদা আসলে একটা বিশেষ ফুলের শক্তিতে বেঁচে আছে, যা একবার ধ্বংস হলে তার সব জাদু শেষ হয়ে যাবে।
সোহানা সেই ফুল খুঁজতে বের হয় এবং কয়েকদিন পর তা খুঁজে পায়। ফুলটি ধ্বংস করার সঙ্গে সঙ্গে গ্রিমলদা তার শক্তি হারিয়ে এক সাধারণ বৃদ্ধায় পরিণত হয়।
রাজ্যে ফিরে গিয়ে সোহানা রাজ্যের রক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সে প্রমাণ করে যে প্রকৃত শক্তি শারীরিক ক্ষমতায় নয়, বরং বুদ্ধি এবং সাহসের মধ্যে লুকিয়ে থাকে।
রাজ্যবাসী সোহানার প্রশংসায় মগ্ন, আর সে হয়ে ওঠে ইতিহাসের এক অনন্যা—সাহসী রাজকুমারি!
No comments